ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মথূরাপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাহিম আহম্মেদ। পড়ালেখা করেছেন বিজ্ঞান বিভাগে। চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থী সে। পরীক্ষার আগের দিন প্রবেশপত্র হাতে নিয়ে দেখেন রেজিস্ট্রেশন হয়েছে মানবিক বিভাগে। এ বিভাগে তাকে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে।
শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় রেজিস্ট্রেশনের সময় বিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে না পেরে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভুলের কারণে ফাহিমের রেজিস্ট্রেশন হয় মানবিক বিভাগে। আবার রেজিস্ট্রেশনের পরে প্রিন্ট কপিতেও তাকে না জানিয়ে স্বাক্ষরও নেওয়া হয়—এমন অভিযোগ তুলছেন ফাহিম।
তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলছেন, এ ভুলের জন্য ফাহিম দায়ী।
বিস্ময় প্রকাশ করে ফাহিমের সহপাঠীরা জানান, দুই বছরে কোনো শিক্ষক বলেনি তার রেজিস্ট্রেশন মানবিক বিভাগে হয়েছে। এক সঙ্গে বিজ্ঞান বিভাগে পড়ালেখাসহ ফরম ফিলাপ করেছি। ব্যবহারিক ক্লাসগুলোও এক সঙ্গে করেছি। তাহলে ফাহিম মানবিকে কেমন করে হয়!
ফাহিম বলেন, দুই বছর বিজ্ঞান বিভাগে লেখাপড়া করেছি। বিজ্ঞান বিভাগের জন্য যে ফি দিতে লাগে তা দিয়ে ফরম ফিলাপও করেছি। বিজ্ঞান বিভাগে পড়ালেখা করে আমি মানবিক বিভাগে কেমন করে পরীক্ষা দিব। বিষয়টি দেখার পরে বিদ্যালয়ে যোগাযোগ করলে প্রধান শিক্ষক আমাকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে বলেন। সে কারণে বাংলা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছি। আমার বিভাগ পরিবর্তন না হলে আমি মানবিকের বিষয়গুলো পাশ করতে পারব না। একটি ভুলের কারণে আমার ১০ বছরের স্বপ্ন ভেঙে যাওয়ার পথে।
ফাহিমের মা ফাতেমা বেগম বলেন, অন্যের বাড়িতে কাজ করে ছেলেকে পড়ালেখা করাচ্ছি। আমার ছেলের সঙ্গে এমন হয়েছে কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। পরীক্ষার আগের দিন থেকে বিষয়টি জানার পরে দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। আমার ছেলেকে নিয়ে খুব আতঙ্কে আছি। কোন সময় কি করে বসে বুঝতে পারছি না। যে সময় রেজিস্ট্রেশনের কাগজে স্বাক্ষর নেয় তখন ফাহিম অসুস্থ ছিল। তারা না বলে স্বাক্ষর নিয়েছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সমাধান করবে বলেছেন। সমাধান না হলে আমার ছেলের জীবন নষ্ট হয়ে যাবে।
মথূরাপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, এ ভুলের জন্য ফাহিম দায়ী। তার রেজিস্ট্রেশন হয়েছে মানবিকে। সে দেখে-শুনে প্রিন্ট কপিতে স্বাক্ষর করেছে। পরীক্ষার ১০ দিন আগে প্রবেশপত্র দেওয়া হয়েছে। তখন কিছু বলেনি পরীক্ষার আগের দিন বিষয়টি জানিয়েছে। এতে আমরাও বেশ বিব্রত। তার ইচ্ছে অনুযায়ী বিভাগ পরিবর্তনের জন্য দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে চেষ্টা চলছে।
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর কামরুল হাসান মোবাইলে বলেন, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আসলে সংশোধনের চেষ্টা করা হবে।